শুক্রবার ৮ এপ্রিল ২০২২ - ১১:৪২
মাওলানা মাসুম আলী গাজী নাজাফী

হাওজা / ইমাম জাফর সাদিক্ব (আঃ) বলেন : রোজাদারের নিদ্রা এবাদত, তার নীরবতা তাসবীহ, তার কর্ম আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য, তার প্রার্থনা কবুল করা হয় এবং ইফতারের সময় তার দোয়া কখনোই প্রত্যাখ্যান করা হয় না।

হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মাসুম আলী গাজী না জাফী

১- রোজার গুরুত্ব।

ইমাম জাফর সাদিক্ব (আঃ) বলেন : ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি জিনিসের উপর বিদ্যমান : নামায, রোজা, যাকাত, হজ্জ এবং বেলায়েত।(বিহারুল আনওয়ার খন্ড ৭৬ পৃষ্ঠা ২৫৭...)

২- রোজাদারের ফযিলত।

ইমাম জাফর সাদিক্ব (আঃ) বলেন : রোজাদারের নিদ্রা এবাদত, তার নীরবতা তাসবীহ, তার কর্ম আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য, তার প্রার্থনা কবুল করা হয় এবং ইফতারের সময় তার দোয়া কখনোই প্রত্যাখ্যান করা হয় না। (বিহারুল আনওয়ার খন্ড ৯৬ পৃষ্ঠা ২৫৩...)

৩- রোজার হিকমত।

হযরত ফতেমা যাহরা (সাঃআঃ) বলেন : আল্লাহ তাআলা এই জন্য রোজা ফরজ করেছেন যাতে আন্তরিকতাকে শক্তিশালী করতে পারেন।

৪- রোজা হল শরীরের যাকাত।

নবী করীম (সাঃ) বলেন : সব কিছুর উপর যাকাত রয়েছে এবং মানুষের শরীরের যাকাত হল রোজা। (বিহারুল আনওয়ার খন্ড ৯৬ পৃষ্ঠা ৩৬৮...)

৫- রোজা হল বিশুদ্ধ এবাদত।

ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব (আঃ) বলেন : রোজা হল এমন একটি এবাদত যা, বান্দা ও সৃষ্টিকর্তার মধ্যে সংঘটিত হয় এবং যার খবর আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না, তাই আল্লাহ ছাড়া কেউ রোজার প্রতিদান দিতে পারেন না।

(শারহ নাহজুল বালাগাহ ইবনে আবিল হাদীদ খন্ড ২০ পৃষ্ঠা ২৯৬...)

৬- রোজা হল জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষাকবচ।

ইমাম জাফর সাদিক্ব (আঃ) বলেন : আমি কি তোমাদেরকে নেকির দরজা সম্পর্কে কিছু বলব? অতঃপর তিনি (আঃ) বলেন : রোজা হল জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষার ঢাল।

(রওযাতুল মুত্তাকিন খন্ড ৩ পৃষ্ঠা ২২৮...)

৭- রোজা হল আল্লাহর রাসূলের দৃষ্টিতে প্রিয় আমল।

নবী করিম (সাঃ) বলেন : আমি দুনিয়ার তিনটি জিনিস খুবই পছন্দ করিঃ

১- গ্রীষ্মকালের রোজা।

২- আল্লাহর পথে তরবারি চালানো।

৩- অতিথিকে সম্মান করা।

(মওয়ায়েয আল আদাদীয়া পৃষ্ঠা ৬৭...)

৮- রোজা হল সর্বোত্তম এবাদত।

ইমাম আলী (আঃ) বলেনঃ জিহ্বার রোজা অপেক্ষা হৃদয়ের রোজা উত্তম এবং জিহ্বার রোজা পেটের রোজা অপেক্ষা উত্তম।

(গুরারুল হেকাম খন্ড ১ পৃষ্ঠা ৪১৭...)

৯- প্রকৃত রোজা।

হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (আঃ) বলেছেন : (রোজার অবস্থায়) মানুষ যেমন খাদ্য ও পানীয় পরিহার করে, তেমনি হারাম কর্ম থেকে বিরত থাকাকে রোজা বলে।

(বিহারুল আনওয়ার খন্ড ৯৬ পৃষ্ঠা ২৯৪...)

১০- অনর্থক রোজা।

ইমাম জাফর সাদিক্ব (আঃ) বলেন : কিছু লোকের রোজা বৈধ নয়।

যেমন :

১- ইমামের অবাধ্য ব্যক্তি।

২- মনিবের কাছ থেকে পলায়নকারী গোলামের রোজা কিন্তু সে যদি প্রত্যাবর্তন করে তবে তার রোজা বৈধ হবে।

৩- স্বামীর অবাধ্যকারী স্ত্রীর রোজা, তবে তওবা করলে তার রোজা বৈধ হবে।

৪- পিতামাতার অবাধ্যতা পুত্রের রোজা, তবে আনুগত্য করলে তার রোজা বৈধ হবে।

(বিহারুল আনওয়ার খন্ড ৯৬ পৃষ্ঠা ২৯৪...)

মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে সত্যিকারের রোজাদার হওয়ার তৌফিক দান করুন এবং নবী নন্দিনী হযরত ফতেমা যাহরা (সাঃআঃ)-এর অসিলায় সকল মোমিনের নেক চাহিদা পূরণ করুন।

আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মদ ওয়া আ'লে মুহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারাজাহুম ওয়াহ শুরনা মাআহুম ওয়াল আন আদুওয়াহুম।

Tags

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha